কক্স২৪ নিউজ ডেস্ক।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাতে ইসরাইলের বর্বর হামলা ও অবৈধভাবে আটকের তীব্র নিন্দা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গাজায় চলমান অবরোধ ভাঙতে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ৫০টিরও বেশি জাহাজের একটি বহর গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে তিউনিসিয়া, ইতালি ও গ্রিস থেকে আরো নৌযান এতে যোগ দেয়। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা ও মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলাসহ কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে ৪৪টিরও বেশি দেশের কয়েক হাজার সচেতন নাগরিক এতে অংশ নেয়। নৌবহরটি গাজার উপকূলের নিকটবর্তী হলে ইসরাইলি বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। ইতোমধ্যেই ৯টির অধিক জাহাজকে আটক করে নিয়ে যায় তারা। মানবিক সহায়তাবাহী এই বহরে ইসরাইলের আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন, সামুদ্রিক সুরক্ষা বিধান ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অবরুদ্ধ গাজা ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। দুই বছরেরও কম সময়ে দখলদার ইসরায়েল ৬৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে শহীদ করেছে, যার অধিকাংশ শিশু ও নারী, এবং ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতালসহ প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ফ্লোটিলার মতো উদ্যোগ মানবতার জন্য আশার প্রদীপ। বিশ্ব সম্প্রদায়ের এমন মানবিক উদ্যোগে ইসরাইলের এই আগ্রাসন কেবল গাজার জনগণকে সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা নয়, বরং বৈশ্বিক মানবতাকেও চ্যালেঞ্জ জানানোর শামিল। সারা বিশ্বের মানুষ মানবিক সহায়তামূলক এই যাত্রাকে স্বাগত জানালেও ইসরাইল ‘ফ্লোটিলার যাত্রা কোনো মানবিক অভিযান নয়, বরং উস্কানিমূলক’ ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করেছে।
শিবির নেতারা জাতিসংঘ, ওআইসি এবং বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো ইসরাইলকে তার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনা এবং বহরের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিশেষত মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও এই ঘটনার তাৎক্ষণিকভাবে আনুষ্ঠানিক নিন্দা প্রকাশ ও কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য দোয়া কামনা করেন। বিশেষ করে নৌযানের বহরে যোগ দেওয়া বৃটিশ-বাংলাদেশি সাহায্যকর্মী রুহি এবং বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ সকল মানবাধিকারকর্মীর নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।