কক্স২৪ নিউজ ডেস্ক।
আজ ৫ আগস্ট। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার বর্ষপূর্তি। প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা, ২০ হাজারের বেশি মানুষকে পঙ্গু করে রক্তের বন্যা বইয়ে গত বছরের এই দিনে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট হাসিনা। পতন হয় ১৬ বছরের এক ফ্যাসিস্ট সরকারের। দেশকে চরম সঙ্কটে ফেলে দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের কথা চিন্তা না করে নিজের জীবন নিয়ে বোন রেহানাসহ ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে সাথী করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। সে থেকেই ভারতে অবস্থান করে আসছেন তিনি। আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষ নেতাসহ অনেকেই গিয়ে দেশটিতে আশ্রয় নেন।
৫ আগস্ট ভোরেও কেউ বুঝতে পারেনি কি হতে যাচ্ছে। ওই দিনই যে দেশের গণমানুষের মুক্তির সূর্য উঠবে তা কেউ ধারণাও করতে পারেননি। ওই দিনই যে শেখ হাসিনা পালাবেন দেশের মানুষ তা বিশ্বাসও করতে পারেনি। তবে আন্দোলন ছিল তুঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া সদস্য আর আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে রাস্তায় রাস্তায় প্রাণ দিচ্ছেন মানুষ। কোথাও কোথাও মানুষের লাশ হাসপাতাল মর্গে পর্যন্ত নেয়ারও কেউ ছিল না। আহতরা রাস্তায় কাতরাচ্ছিলেন। হাসিনার অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেপরোয়া গুলি করছে, আর সেই গুলির সামনে বুক চেতিয়ে ধরছেন স্বাধীনতাকামীরা। হঠাৎই দুপুরের দিকে চারিদিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে হাসিনা পালিয়েছে। হাসিনার সেই পালানোর দৃশ্যের ছোট একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। মানুষ রাস্তায় নেমে আসে বিজয়োল্লাসে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের এক দফা দাবির মুখে শেখ হাসিনা বাধ্য হন দেশ ছেড়ে পালাতে। পদত্যাগ করে বেলা আড়াইটার দিকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছাড়েন হাসিনা। তার সাথে ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। হেলিকপ্টারটি ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে শেখ হাসিনার শেষ গন্তব্য নিয়ে তখন ধোয়াশা ছিল। পদত্যাগের আগে শেখ হাসিনাকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দেয়া হয়। শেখ হাসিনা যখন দেশ ত্যাগ করেন তখন গণভবনের পাশে লাখ লাখ ছাত্র-জনতা অপেক্ষা করছিল ভেতরে প্রবেশের জন্য। হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের একজন ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধানের লজ্জাজনক বিদায় ঘটে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন লজ্জাজনক বিদায় ঘটেছে হাতেগোনা কয়েকজন স্বৈরাচারের।