নিউজ ডেস্ক।
চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের জিডিপিতে অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ। এমতাবস্থায় এ দুটি বন্দরসহ দেশের সব রেল, স্থল, নৌ, সামুদ্রিক ও বিমান বন্দরগুলোসহ সার্বিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন না হলে আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ব।
লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো আমাদের কোন দীর্ঘমেয়াদি বৃহৎ মাস্টারপ্ল্যান অনুপস্থিতি। বাস্তবতা হলো বিশেষকরে লজিস্টিক খাতে আমরা একটি জায়গায় আটকে আছি, আমাদের অগ্রগতি কাঙ্খিত মাত্রায় নয় এবং বিষয়টি বেশ হতাশার।
রোববার ডিসিসিআইতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে লজিস্টিক খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়) ড. শেখ মইনউদ্দিন উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ’লজিস্টিক পারফরম্যান্স ইনডেক্স ২০২৩’-এর তথ্য মতে লজিস্টিক খাতে বিশ্বের ১৩৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮, বন্দরে যানজট, কাস্টমস প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুপস্থিতি ও অপ্রতুল অবকাঠামো আমাদের আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি সামগ্রিক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে প্রতিনিয়ত ব্যাহত করছে।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আমাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে আমাদের সড়ক, রেল, নৌ, বিমান ও সমুদ্র বন্দর এবং ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ের সমন্বয়ে একটি বহুমাত্রিক পরিবহন ইকোসিস্টেম প্রয়োজন, অন্যথায় আমাদের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো আমাদের কোন দীর্ঘমেয়াদি বৃহৎ মাস্টারপ্ল্যান অনুপস্থিতি। তিনি জানান, আগামী ২৫-৫০ বছরের জন্য উপযোগী একটি সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। নীতি প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে না পারার কারণে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই গৃহীত নীতিমালা হতে কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন।
বিশেষ অতিথি মো. সলিম উল্লাহ জানান, সম্প্রতি প্রণীত লজিস্টিক নীতিমালা পুনঃমূল্যায়নের জন্য সরকার ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশের আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বিআইডব্লিউটিএ শীঘ্রই একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি অবহিত করেন।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বিল্ডের চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান বলেন, বাস্তবতা হলো বিশেষকরে লজিস্টিক খাতে আমরা একটি জায়গায় আটকে আছি, আমাদের অগ্রগতি কাঙ্খিত মাত্রায় নয় এবং বিষয়টি বেশ হতাশার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশর চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এম মাশরুর রিয়াজ। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, গত কয়েক দশকে আমাদের বেসরকারিখাতের নেতৃত্বে পরিচালিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও বিশেষকরে তৈরি পোষাক খাত এবং কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দেশ ও অঞ্চলের বাজারের উপর আমাদের রপ্তানি পণ্যের নির্ভরশীলতা ঝুঁকির বিষয়। সেই সাথে প্রতিবছর প্রায় ২২ লাখ নতুন মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির বিষয়টিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ সহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।