কক্স২৪ ধর্মীয় ডেস্ক।
নবীজির প্রতি দরুদ অনেক বরকতময় একটি আমল। যা সবসময় সর্বাবস্থায় করা যায়। তবে, বিশেষ কিছু সময়ে দরুদ পড়তে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে হাদিসে। যেমন- দোয়ার শুরুতে, জুমার দিন, আজানের পর, মসজিদে প্রবেশের সময় এবং বের হওয়ার সময়, নবীজির নাম শুনলে, নবীজির নাম লেখার সময় সাথে দরুদও লেখা, অজুর পরে দরুদ, তাওবা-ইস্তেগফারের পরে দরুদ ইত্যাদি। হাদিসে বর্ণিত দরুদ ও সালামের শব্দ-বাক্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া আমাদের কর্তব্য। এখানে হাদিসের আলোকে ছোট আকারের দশটি দরুদ তুলে ধরা হলো।
১. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ،وَّأَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আনজিলহুল মাক্বআদাল মুক্বাররাবা ঈনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ।’ অর্থ: হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন এবং কেয়ামত দিবসে তাঁকে সমাসীন করুন আপনার নৈকট্যপ্রাপ্ত আসনে।’ (আলমুজামুল কাবির, তবারানি: ৪৪৮০; মুসনাদে আহমদ: ১৬৯৯১; ফাদলুস সালাত: ৫৫; মুসনাদে বাজজার: ২৩১৫; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১৭২৫৯)
২. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَصَلِّ عَلٰى الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ،وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসূলিকা, ওয়াসাল্লি আলাল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনাত ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাত।’ অর্থ: হে আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসুল মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি এবং সকল মুমিন ও মুসলিম নর-নারীর প্রতি।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৯০৩; আলআদাবুল মুফরাদ: ৬৪০; মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৩৫২)
৩. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّسَلِّمْ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়াসাল্লিম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক: ১৬৬৪; মুসনাদে আহমদ: ২৬৪১৬; জামে তিরমিজি: ৩১৪)
৪. اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ উচ্চারণ: ‘আসসালামু আলাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।’ অর্থ: ‘আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে নবী! এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত।’ (সহিহ বুখারি: ৮৩১)
৫. صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ উচ্চারণ: ‘সাল্লাল্লাহু আলান্নাবিয়্যি মুহাম্মাদিন।’ অর্থ: ‘আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন নবী মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি। (সুনানে নাসায়ি: ১৭৪৬)
৬. اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَبَرَكَاتِكَ عَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا جَعَلْتَهَا عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাজআল সালাতিকা ওয়াবারাকাতিকা আলা আ-লে মুহাম্মাদিন কামা জাআলতাহা আলা আ-লে ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার রহমত ও বরকত দান করুন মুহাম্মদ (স.)-এর পরিবারবর্গকে, যেরকম দান করেছেন ইবরাহিম (আ.)-এর পরিবারবর্গকে। আপনি নিঃসন্দেহে অতি প্রশংসিত, মহিয়ান।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৮৭২৬; ফাদলুস সালাত: ৬৫)
৭. اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম আলা মুহাম্মাদিন ওয়াআলা আ-লে মুহাম্মাদ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি রহমত ও প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন মুহাম্মদ (স.)-এর উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর।’ (আলআযকার নাববি, পৃ. ১৭৭; আলকাউলুল বাদি’, পৃ. ৪০০,সালিহ লিলআমাল)
৮. صَلّى اللهُ عَلٰى النَّبِيِّ وَسَلَّمَ উচ্চারণ: ‘সাল্লাল্লাহু আলান্নাবিয়্যি ওয়াসাল্লাম।’ অর্থ: ‘রহমত ও শান্তি অবতীর্ণ হোক নবীজির ওপর।’ (নাতাইজুল আফকার, ইবনে হাজার: ১/২৮৩, সহিহ)
৯. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহীম, আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইবরাহীম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (স.)-এর উপর রহমত নাজিল করুন, যেমন রহমত নাজিল করেছেন ইবরাহিম (আ.)-এর পরিবারবর্গের উপর।’ (সুনানে কুবরা, নাসায়ি: ৯৭৯৬; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১০২ (১১১) (সহিহ)
১০. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি উম্মী নবী মুহাম্মদ (স.)-এর উপর রহমত বর্ষণ করুন।’ (আততারগিব ওয়াত তারহিব, কিওয়ামুস সুন্নাহ: ১৬৫৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৮৮ (৮২); আলকাউলুল বাদি’, পৃ. ৩৭৯ (সহিহ)