কক্স২৪ নিউজ ডেস্ক।
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, জিওপলিটিক্যাল কৌশল ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ ব্যবহার করে ভারত সরকার সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই মাসে জনগণের গণঅভ্যুত্থান সেই ষড়যন্ত্র চূর্ণ করেছে।
রোববার জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি অগণতান্ত্রিক সরকার বাংলাদেশে এক যুগ ধরে ক্ষমতায় ছিল। দিল্লি শুধু হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখেনি বরং এই অঞ্চলে ‘রিজিওনাল হেজিমনি’ প্রতিষ্ঠার নীতিতে কাজ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশি জনগণের ঐক্যবদ্ধ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ভারতীয় চক্রান্তকে রুখে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লব প্রমাণ করেছে- জনগণই চূড়ান্ত ক্ষমতার উৎস। ভারতসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তি এই বিপ্লবের গভীরতা বুঝে উঠতে পারেনি। ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার শেখ হাসিনার দুঃশাসনকে সমর্থন দিয়েছিল, কারণ তা তাদের আঞ্চলিক কৌশলের অংশ ছিল। তবে তাদের ‘মাইনরিটি কার্ড’ খেলার ব্যর্থতা এবং ষড়যন্ত্রমূলক কূটনীতি এখন দৃশ্যমান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, একজন শাসক যখন জনগণের ওপর নির্ভর না করে বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করেন, তখন সে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আর হাসিনা সরকার ছিল পুরোপুরি ভারত নির্ভর। আওয়ামী লীগের পতনের পর হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং ভারত তাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব কেবল বাংলাদেশের নয় বরং বিশ্বের অন্যান্য স্বৈরশাসকদের জন্য এক সতর্কবার্তা। গণতন্ত্র কখনোই দীর্ঘ সময় দমন করা যায় না। জুলাই অভ্যুত্থানে ইসলামি বিশ্বের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষী মনোভাব বেড়েছে এটা দিল্লিকে মেনে নিতে হবে। কারণ ভারত হাসিনাকে অগণতান্ত্রিকভাবে আজীবন ক্ষমতায় রাখতে চেয়েছিল। ভারতকে তার মনোভাব পাল্টাতে হবে।
সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও গবেষণা সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (RIT)’। এতে সহ-আয়োজক হিসেবে অংশ নেয় ১৩টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানিয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ (যুক্তরাজ্য), সোচ্চার (যুক্তরাষ্ট্র), ইনসাফ, সিপিএএ (ঢাকা), সিপিএসআর (তুরস্ক) এবং জাগরণ ফাউন্ডেশন (যুক্তরাজ্য)