ইসলামিক ডেস্ক।
আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা প্রায় সবাই কম-বেশি গুনাহে জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু গুনাহ করার পর কী প্রতিক্রিয়া দেখাই - সেটাই আমাদের ঈমানের আসল পরীক্ষা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, "প্রত্যেক আদমসন্তানই গুনাহগার, আর সর্বশ্রেষ্ঠ গুনাহগার তারা যারা তাওবা করে" (তিরমিযী, ২৪৯৯)। আসুন জেনে নেই গুনাহের পর লজ্জিত হওয়ার ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি।
.
কুরআনের আলোকে অনুতাপের গুরুত্ব এই যে—আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন (সূরা বাকারা: ২২২), আর প্রকৃত মুমিন সেই, যে গুনাহ করে ফেললেও সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে (সূরা আলে ইমরান: ১৩৫); ইবনে কাসীর (রহ.) এবং অন্যান্য তাফসিরকারগণ বলেন—এখানে মুমিনদের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে: তারা ভুল করে, কিন্তু সেই ভুলের স্থায়ী বাসিন্দা হয় না। বরং তারা আল্লাহর স্মরণে ফিরে আসে, অন্তর ভেঙে পড়ে, এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
লজ্জা কেবল সামাজিক ভদ্রতা নয়, বরং ঈমানের প্রাণ। একজন মুমিন যখন গুনাহ করবে তখন তার অন্তর কেঁপে ওঠবে, তার লজ্জা জন্ম নিবে এটাই ছিলো স্বাভাবিক। অথচ আজকাল অনেকেই প্রকাশ্যে গুনাহ করে, এমনকি তা গর্বের স্ট্যাটাসে রূপ দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাসূল ﷺ বলেছেন, “লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।” (বুখারী: ২৪)
গুনাহের পর লজ্জা বোধ করা প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গুনাহ থেকে তওবাকারী ব্যক্তি নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪২৫০)
অনুতাপ শুধু একটি ধর্মীয় অনুভূতি নয়, বরং তা মানসিক শান্তি বৃদ্ধির কারণ, আত্মসম্মানবোধ জাগরণ ও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধের মনোবৈজ্ঞানিক উপশম, যা হযরত আদম (আ.)-এর অনুতপ্ত হৃদয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করে—গুনাহর পর দ্রুত ফিরে আসাই মানবজাতির প্রকৃত মুক্তির পথ।
তওবা হলো আল্লাহর বিশেষ রহমতের দরজা। তিনি বারবার গুনাহ করলেও তওবা কবুল করতে প্রস্তুত, যদি বান্দা আন্তরিক হয়। রাসূল ﷺ বলেছেন, "হে মানুষ! আল্লাহর কাছে তওবা করো এবং ক্ষমা প্রার্থনা করো। আমি দিনে একশতবার তওবা করি।" (মুসলিম (২৭০২)
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ বাকী উল্লাহ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত